পরিচিত

সরলতা (অক্টোবর ২০১২)

পন্ডিত মাহী
  • ২৪
  • ৩৯
এক
“একাই ছিলাম। পুরোপুরি একা। বারান্দা দিয়ে কোন কোন উপন্যাস বা গল্পে যেমন একটা বিদ্যুতের তারের উপর একা একটা কাক দেখা যায়। ঠিক তেমন একা। কোন উদাস চোখের নায়িকা চেয়ে থাকেনি। কোন কিছু নিয়েই তাই কিছু ভাবিনি। তবু হঠাৎ করেই রোদেলা আকাশ থেকে টপ টপ করে বৃষ্টি পড়তে শুরু করে। আমি অবাক হয়ে তাকাই। আকাশে কেউ কাজল পড়িয়ে দিয়েছে আমার অজান্তে। কি সর্বনাশ! তারপর একটা ঝড় হয়ে তুমি এলে। কোন কিছু না উড়িয়ে মনে মনে গেড়ে বসলে। এতদিনে শেকড় গজিয়েছে। সবুজ পাতা প্রতি বসন্তে এসেছে, শীতে ঝরেছে।

আমি এরপর কবিতা লিখতে শিখেছি। তোমার পায়ের নীচের ঘাস থেকে শুরু করে নীল আকাশ পর্যন্ত একটা একটা নতুন শব্দ যোগ করে, দিয়েছি ছন্দ, সুর। ওগুলো সব কবিতা হয়েছিলো।

এরপর আমি অভিমান করতে শিখেছি তোমার চোখের আড়ালে। একটু কম কথা বললেই, বা এক মিনিট দেরী করলে আমার গাল, মুখ, মনের ভেতরটা অভিমানের অপ্রতিরোধ্য জ্বালায় ফুলে ফেঁপে ওঠে। মাঝে মাঝে আমি বকতাম।

হাসতে শিখেছি, কাঁদতেও। চিঠি লিখতে বসে যেখানে কলম কামড়িয়ে পেছন দিকের মানচিত্র পালটে ফেলতাম, এখন আর সেটা হয়না। আমি তোমাকে চিঠি লিখতে শিখেছি। সাথে মেঘ আর রোদের কবিতা অজস্রবার।
আরো একটা কিছু শিখেছি, সেই প্রথমবার ডুব সাঁতারে তোমার গভীর তলহীন চোখে,- ‘ভালোবাসতে’।”


নোটবুকটা বন্ধ করতেই রাজীবের একটা বড় দীর্ঘশ্বাস পড়লো। এখন প্রায়ই দীর্ঘশ্বাস পরে যখন তখন। একটা রোগের মত হয়ে গেছে। কিন্তু এমন না যে শ্বাসকষ্টের সমস্যা। কোন কষ্টও নেই। ভাবতে ভাবতেই আরো একটা দীর্ঘশ্বাস বুকের দরজায় বেল বাজাতে শুরু করে। রাজীব উঠে দাঁড়ায়।

শংকর রোডের এই বাড়ীটা রাজীব পিতৃ-সূত্রে পেয়েছে। বাবা মারা যাবার পর অবহেলা অনাদরে বাইরের সেই আদি চাকচিক্য ধুয়ে মুছে গেছে আগেই। বাড়ির ভেতরের মানুষগুলোর পোশাক পালটালেও, বাড়ির কপালে আধ বালতি রঙ্ও জোটে নাই। রাজীব চেপে রাখা দীর্ঘশ্বাসটা এখনই ছাড়বে কিনা বুঝতে পারছে না। তার টাকার অভাব নেই। যাক না আরেকটা বছর সামনের বার করে ফেলবে।

বাড়ির ভেতর চারিদিকে একটা গোছানো ভাব। বারান্দা ঘেঁষা ওর স্টাডি রুমে লেখার টেবিল জায়গা-মত। সেলফে বইগুলো উচ্চতা বুঝে পাশাপাশি সারিবদ্ধ ভাবে দাঁড়িয়ে। লেখার খাতা টেবিলের থাকে। কলমগুলো কলমের দানিতে। প্লান করে দেয়াল রঙ করানো। ওপাশে একটা আলমারি, তার একপাশে আরেকটা টেবিলে কম্পিউটার। আর একটা বিছানা। অল্প কিছুতে যত ছিমছাম রাখা যায়।

রুপালীর সবদিকেই সমান নজর। সুন্দরের প্রতি অদ্ভুত রকমের উৎসাহ। এলোমেলো কোন কিছুই ওর ভালো লাগে না। রাজীব এর কিছুই না। গোছানোও নয়, এলোমেলোও নয়। ও নিজেকে তাই একটা আসবাবপত্র ভাবে। যে পাত্রে তাকে যেভাবে রাখা যায়। হয়তো ও লিখছে, রুপালী এক কাপ চা এগিয়ে দিলো। রাজীব ঘণ্টা খানিক পরে বুঝতে পারে ওটা চা ছিলো। রুপালীর ভয়েই হোক আর বেখেয়ালেই হোক ঠাণ্ডা চা’ই এক চুমুকে খেয়ে সাবাড় করে।

ইদানীং ছিমছাম ঘরটাকে এক নিমেষেই এলোমেলো করে ফেলতে ইচ্ছে করে। রাজীব পারে না করতে। আগে হলে পারতো, রুপালী তখন হেসে বলতো,
‘কি মাথা খারাপ হলো নাকি! পাগল আমার...’

হয়তো একটু চুল টেনে বলতো, একটু গালে হাত দিয়ে,
‘যাও হয়েছে, আমায় আর জ্বালাবার ফন্দি করতে হবে না। আমি গুছিয়ে দিচ্ছি...’

এখনও কি আগের মত হতে পারে না! মনে হয় না। রুপালীর এখন অনেক কাজ। একা সামলাতে পারে না। এখন ওমন করলে বিরক্ত হবে। সকাল থেকে কাজের লোকের মত কাজ করে চলে সারাদিন। রাজীব বসে বসে বোঝার চেষ্টা করে, কষ্ট গুলোও। মাঝে মাঝে কাছে ডেকে কথা বলার চেষ্টা করতেই গিয়ে দেখে কোন একটা কাজে বাগড়া দিয়ে ফেলেছে। রুপালীর কপাল কুঁচকে যায়। কাজগুলো তো ওকেই করতে হবে। সংসারে তো আর কেউ করার নেই। তাই রুপালীর অনেক কাজ, অনেক কষ্ট।

অনেক রাতে কাজ শেষ করে দুজন যখন বিছানায়, মুখে কোন কথা নেই কারো। কখনো কখনো নিজে থেকে বলা ছাড়া, গল্প হয় না। যেটুকু হয় তাও বেশীক্ষণ জমে না। রাজীব ভাবে, এই কি তবে পালটে যাওয়া। আগেই তো ভালো ছিলো। প্রতিদিন নিয়ম করে অনেক অনেক কথা হতো। পার্কে, লেকের ধারে, ফোনালাপে।

আচ্ছা পার্কের সেই গন্ধরাজের গাছগুলো এখন কত বড় হয়েছে! সিঁড়ির পাশে বসার জায়গাটা কি খালি পাওয়া যায়। ওখানেই সব থেকে ভালো বসতে। রুপালী সব কয়টি সিমেন্ট বাধানো চেয়ারে বসে দেখেছে। গরমের সময়ও বেশ ঠাণ্ডা আর রোদ কম। সামনের পুকুরের ঘোলাটে সবুজ জল থেকে ছুঁয়ে আসা ঠাণ্ডা বাতাস শরীরে এসে কোমল ভাবে বসতো। সব কি আগের মত আছে!


দুই
“রুপালী প্রায়ই আমার ব্যস্ততাকে দূরে রাখে। খুব কৌশলে একটু একটু করে জায়গা করে দেয় অফিসের জন্য লেখার জন্য আলাদা সময়। আমি রুপালীকে কোন জায়গা দিতে পারিনি। সকাল বেলা উঠে দাঁত ব্রাশ করতে করতে রুপালীকে দেখি রান্নাঘরে গরমে ঘামতে। খুব ইচ্ছে করতো সে সময়, গিয়ে সযত্নে তা মুছে দিতে। অফিসের তাড়া, ঘড়ির কাটার টিক টিক শব্দে লাফিয়ে চলা গতির সাথে আমার আর প্রতিযোগিতা হয় না। আমার কুঁচকে যাওয়া শার্টে প্রতিদিন ইস্ত্রির তপ্ত শরীর পরে। জুতোর ময়লা সরে ঝকঝক করে। জায়গা-মত হাতঘড়ি, সেলফোন, বাসে বসে গান শোনার হেডফোন, চাবির গোছা, মানিব্যাগ আর তাতে খুচরো টাকা- সব গোছানো থাকে। আর রুপালীর কপালে সকালের বেড়ে ওঠা অগোছানো বিন্দু বিন্দু ঘাম কখনোই স্থানচ্যুত হয় না, মুছে দেওয়া হয়না বহুকাল।

আমি চলে যেতেই হয়তো ও বারান্দায় চলে যাবে। বাতাসের কানে কানে বলবে,
‘ও আমায় আগের মত ভালোইবাসে না’

আমি শুনবো না, বাসের হর্ন আমার আমার লেট হবার রেড লাইনের কথা মনে করিয়ে দেয়। শুনলে আমার বুকের ভেতরটায় তোলপাড় হবে, কষ্ট হবে। আমার আর কাজে মন বসবে না। সারাদিন অস্থিরতায় আমার মন খারাপ থাকবে।
তাই রাস্তায় পা ফেলেই প্রতিদিন বাতাসকে বলেছি,

আমার রুপা,
সে এক অচেনা সাগরের
জল ছুঁতে চেয়েছিলো ভুলে-
সে ইচ্ছে ইচ্ছার ঈশ্বরের কাছে
মঞ্জুর হয়নি এখনো।
বাতাস তুমি সেই সাগরের
ঠাণ্ডা জল বুকে করে
রুপার কপালে ছুঁয়ো
রুপাকে দেখে রেখো...”

নোটবুকটা দিকের পলকহীন চেয়ে আছে রাজীব। কলম আর চলে না। যখন তখন কবিতা লেখার অভ্যাসটা এখন একটা ভোঁতা যন্ত্রণা দেয়। কিছু হলেই একটা কবিতা লিখতে ইচ্ছে করে। মন ভাল থাকলে লেখে, খারাপ থাকলে লেখে। রুপালী যদি বকে তবু লেখে, হাসলেও লেখে। কবিতা ভালোবেসে স্ট্যাটাস দিয়ে রাখে, ‘ভালোবাসি কবিতা’।

রাজীব ভাবে, রুপালী সেখানে নেই। রুপালী কোথাও নেই। জাগতিক সব কিছুর মধ্যে রুপালী একটা নাম, একটা শরীর। একটা পরিচিত শরীর। প্রতিদিন এই গোছানো সংসারে রুপালীর কল্যাণে বিছানার কোনাও নির্ভাজ থাকে। শুধু মনের কোনায় ভাঁজে ভাঁজে অস্থির ভালোবাসা কর্পূরের মত উবে যায়। রাজীব বুঝতে পারে।

অফিস থেকে ফিরে কিংবা ছুটির দিনে সহ-লেখকদের আড্ডা ডিঙ্গিয়ে বাড়ি ফিরে রাজীব বড্ড ক্লান্ত থাকে। রুপালী ফ্যান ছেড়ে দেয়। হাত-মুখ ধুয়ে রাতের খাবারের ফাঁকে ফাঁকে টুকটাক কথা,

‘খেতে পারছো! শিম ভাজিটা ভালো হয়েছে তো!’
‘হুম, ঠিক আছে’
‘ঐটা নাও, টমেটো আর চিংড়ির ভুনা...’
‘নেবো, তুমি খাও’

প্রতিটি রাত এমনই। মাঝে মাঝে মন অতি ভালো থাকলে নিজে থেকেই রাজীব বলে,
‘এই জানো আমার ঐ লেখাটা সবাই পছন্দ করেছে। অনেক প্রশংসা পেয়েছি’
রুপালী হাসে।
‘হ্যাঁ, লেখাটা তো ভালো। আর তুমি তো সব সময় ভালো লেখো। আরো মনোযোগ দিয়ে লেখো। লেখার সময় এটা ওটা ভেবো না, আরও ভালো হবে।’

রুপালীর কাছ থেকে এমন কথা শুনে রাজীব উৎসাহিত হয়। তখনই ঠিক করে, আজ রাতেই আরেকটা কিছু লিখে ফেলবে। রাজীব লেখে। রুপালী জেগে থাকে। বই পড়ে, ল্যাপটপে গেমস খেলে। ওর সময় কাটে না। রাত বাড়ে। গাছের আড়ালে লুকিয়ে থাকা ঝিঁ ঝিঁ পোকার দলও ঘুমিয়ে পড়ে। রুপালী তবু কখনো বলে না, ‘এই রাত জেগো না। কাল সকালে অফিস আছে।’ কিংবা ‘আমার ভালো লাগছে না, ঘুম পাচ্ছে’

রাজীবের লেখা শেষ হওয়ার অপেক্ষায় রুপালী জেগে থাকে। লেখা শেষ হলে, রুপালী কে ডেকে পড়তে দেয় রাজীব। ও ভুল গুলো শুধুরে দেয়। রাজীবের ঘুম পায়। লেখা শেষ করার আনন্দে খুশি মনে বিছানায় যায়। রুপালী ওর সাথে। অর গলা জড়িয়ে কাঁধে আলতো করে মাথা রেখে শুয়ে পরে। ঘুমিয়ে পড়ার আগে রুপালীর চুপিচুপি দীর্ঘশ্বাস ফেলা রাজীবের কানে শেলের মত বাজে। রাজীব গোপনে শোনে, অবিশ্রান্ত এই ব্যস্ততার মাঝে নিঃসঙ্গতার কষ্ট রুপালীকে গলা টিপে ধরে। এই ফাঁকে রাজীবের কয়েকটা কবিতার লাইন মনে পড়ে। খুব লিখতে ইচ্ছে করে।


তিন
দীর্ঘশ্বাস গুলো ফেলার ব্যবধান ক্রমেই কমে আসছিলো। রুপালী এখন প্রায় সময় চুপ করে থাকে। রাজীব মন খারাপ ভেবে কত চেষ্টা করে। কোথাও কোন অভাব রাখেনি, অস্বচ্ছলতা নেই। প্রায়ই এদিক সেদিক বেড়াতে যাওয়া হয়। তবু রুপালী আর রুপালী নেই। রুপালী শুষ্ক পাতার মত নির্জীব।

সংসারে রুপালী সবই হাসি মুখে মেনে নিয়েছে, প্রতিনিয়ত নিচ্ছে। কোন অভিযোগ নেই। কিন্তু একটা চাওয়া ভেতরে ভেতরে খুব জ্বালিয়ে মারে। সেটা বুঝি মূল্যহীন সবার কাছে। সেই মনের গভীরের একান্ত পাগলামি, আদর, আর উষ্ণতা যা রুপালীর মন চায়। সে পায়নি। জাগতিক কাজের মাঝে, ব্যস্ততার মাঝে পরিচিত সরল হৃদয় বুঝি সেটুকু বুঝতে পারে না। মানতেও পারে না একদম। কিন্তু রাজীব তো বুঝতে পারতো। আর সবারটা তো বোঝে!

‘তুমি তো কত গল্প লেখো, কবিতাও। গল্পের নায়িকাদের কষ্ট বোঝ, জানো। আমারটা বোঝ তো। হতচ্ছাড়া রুপালীকে কেমন বেঁধে দিলে। আমায় যদি তোমার মনের খোলা আকাশ নাই দিলে, তবে উড়তে বলো কেন?’

রুপালীর আনমনে বলে ওঠে। অভিমানে ওর চোখে জল আসে। ছেড়ে যেতে চায়না মন। পাগলটা কি খাবে, ঠিক মত গোছল করবে তো। এটা খায় না, ওটা খায় না। ঝাল হলে খেতে পেরে না। কে খেয়াল রাখবে! তবু রুপালী দরজা খুলে বাইরে দাঁড়ায়। খোলা আকাশের নীচে।

টেবিলের উপর ক্যাটক্যাটে হলুদ রঙ্গা খাম দেখেই বুঝতে বাকি রইলো না। ওটা রুপালীর চিঠি। চিঠি আদান-প্রদানের সেই লুকোচুরির কথা মনে পরে যায় রাজীবের। রাজীব ছোঁ মেরে তুলে নেয়,


“আমার জীবনে সুখ ছিলো প্রজাপতির মতন। তুমি তা দিয়েছো। কিন্তু জানো তো, সুখ সারাজীবন ধরে সমুদ্রের মত দুলতে পারে না। গোপনে গোপনে এক বিন্দুতে স্থির হয়ে থাকে। কিন্তু আমার যেন কেমন লাগতো। বোঝাতে পারবো না। হয়তো একটা কথা শুনলাম, তুমি বললে। হয়তো নানান কাজের চাপে যে কথা বলেছিলে তা ভুলে গেলে। কিন্তু আমি সে কথা আমার শেকড়ে শক্ত করে বেঁধে রাখলাম। সে ধরে থাকায় অনেক শক্তি দরকার। আমি তেমন করে তোমার দেওয়া প্রতিটি কথা, মুহূর্ত ধরে আছি। হাজার মানুষের ভীরে তোমাকে আমি হারিয়ে ফেলিনি। এ কথাটা আমি তোমাকে বিশ্বাস করাতে চাই।

এখানে সেখানে সব মিলিয়ে আমাদের সব কিছু গোছানোই ছিলো, আছে। তারপরও কোথায় যেন একটু কথা থাকে, বলতে পারবো না। বোঝাতে পারবো না। গভীরের কোন অনুভূতি, আজন্ম লালন করা কোন মধুর স্মৃতি, আর সব যা আমাকে আজো বাঁচিয়ে রাখে- বুঝি না। তুমি কি সেটা বুঝতে পারো? কিছুটা যখন আমি বুঝতে পারি। তখন দেখি তা শুধু তুমি।

তাই গহীনে ডুব দিয়ে বুঝি, ভালোবাসার রঙ্গিন মেঘগুলো অনেক রঙ ছড়ায় আমার মনে। সেই নানান রঙ আমি নানান ভাবে মনের অজান্তেই কল্পনা করি। মনে মনে সে কল্পনা কখনো ভালো, কখনো মন্দ, কখনো জীবন নিয়ে, কখনো বাসনা নিয়ে, কখনো কামনায়। আর আমার গভীরের সমস্ত ভালোবাসা দিয়ে আমি তোমাকেই ভালবেসেছি।

‘ভালোবাসি জলের ভিতরকার হাল যেমন আকাশের উপরকার পালকে ভালোবাসে- পালে লাগে বাতাসের গান আর হালে জাগে ঢেউয়ের নাচ’ তেমনি ভাবে-

আর ‘বাসবো যেন বলেই আমার অনবকাশের উজান ঠেলে কাউকে কখনো আনিনি। পালের হাওয়ায় অনায়াসে আসবে এই প্রতীক্ষাতেই থাকি। সে যদি ঝড়ের হাওয়াও হয় সেও ভালো’

নাও এই শেষ করছি। আর জ্বালাচ্ছি না। অনেকদিন অনেক কথা হয় না তো! তাই কত কথা বলে ফেললাম। তোমার কথাও শুনতে বড় ইচ্ছা করে। সারারাত ধরে আমি কান পেতে রই, তুমি বলবে। হয়তো একটাই কবিতা, সারারাত ধরে। শুধু আমার জন্য। আমি তো নিজের জগতে বাধা পরে নেই। কবেই যেন কোথায় সঁপে দিয়েছি। সে জগতটা অনেক পরিচিত। দূরে থাকতে তাই কষ্ট হবে। অনেকদিন পর যখন মনে হয়েছে, ভালোবাসা ছাড়া অন্য কিছুতে আমি শৃঙ্খলিত। নিয়মটা ভাঙ্গতে চাইলাম।

কেননা আমি সব সময় ভেবেছি, চেয়েছি আমার ভালোবাসা সবসময় দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হবে চিরকাল। কোন সীমারেখায়, কোন নিয়মে যাকে বাঁধা যাবে না। আমার স্বপ্ন শুধু আমার। আমার মেঘ শুধু আমার জন্যই ঝরাবে জল ফোঁটা ফোঁটা।

আর আমি মুগ্ধ পথিক হয়ে সে ফোঁটা ফোঁটা ভালোবাসা গায়ে মাখাবো।

মেঘ তুমি শুনছো তো! চৈত্রের খরা বুকের মাঝে। ও মেঘ তুমি কি শুনতে পাচ্ছও? আমি চাতক হয়ে চেয়ে আছি। আমি তৃষ্ণার্ত।

ইতি, রুপালী।”

..............................................................
নোট ঃ ..........................................................
‘ভালোবাসি জলের ভিতরকার হাল যেমন আকাশের উপরকার পালকে ভালোবাসে- পালে লাগে বাতাসের গান আর হালে জাগে ঢেউয়ের নাচ’
এবং
‘বাসবো যেন বলেই আমার অনবকাশের উজান ঠেলে কাউকে কখনো আনিনি। পালের হাওয়ায় অনায়াসে আসবে এই প্রতীক্ষাতেই থাকি। সে যদি ঝড়ের হাওয়াও হয় সেও ভালো’

এই লাইন দুটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "রক্তকরবী" থেকে নেওয়া হয়েছে।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
সূর্য কখনো কখনো বুকের খাঁচায় ঘাপটি মেরে থাকা কথারা অভিমানের মালা হয়ে যায়.... কিন্তু গলা হয়ে মুখ পর্যন্ত আর পৌছুতে পারে না, আবার অনেক ভালবাসাও যখন বলে কয়ে প্রকাশ করা যায় না.... এদের অনুভুতি যেমন হয় তোমার গল্পটা ঠিক তেমনই। একদিন এ গল্পটা নিয়ে তুমি গর্ব করতে পারবে মাহী।
শিউলী আক্তার মাহী দা অন্তর ছুঁয়ে যাওয়া লেখনী ------- শুভ কামনা !
মিলন বনিক অসাধারণ মাহী ভাই অসাধারণ...সংসারটা যদি এমন কল্পনার রঙ্গে সারাক্ষণ ছুয়ে যেত...আপনার অনুভুতিগুলো সত্যিই মন ছুয়ে গেল...অনেক অনেক ভালো লাগা....
জিনিয়া একেই কি বলে "আমার সুখের অসুখ হয়েছে?!!!" রুপালি আর রাজীব কে দেখে তাই মনে হলো!!!শুভকামনা..
মামুন ম. আজিজ তেমন কোন কাহিনী গড়ে ওঠেনি..তবে ভাষা আর কাব্য সুধার ঢলে লেখাটি গভীর মান পেয়ে গেলো।
মাহবুব খান মধ্য অথবা শেষ বযস এর পরাবাস্তব গল্পকবিতা অসাধারণ !অনেক অনেক ভালো
জসীম উদ্দীন মুহম্মদ মাহী ভাই প্রেমে পড়ার মত গল্প !
ভাবনা আর আমি মুগ্ধ পথিক হয়ে সে ফোঁটা ফোঁটা ভালোবাসা গায়ে মাখাবো। ------- দারুণ !

০১ ফেব্রুয়ারী - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৬৫ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪